সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে পোস্ট করার বিরোধের জের পোস্টদার দোকান ঘর লুট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার ছেলে ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৯ আগষ্ট মঙ্গলবার দিবাগত-রাতে উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বোরখাড়া গ্রামের। বিষয়টি জানাজানির পর উপজেলা জুড়েই লোকমুখে বইছে আলোচনা আর সমালোচনার ঝড়। অভিযুক্ত উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বোরখাড়া গ্রামের ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাফিজ উদ্দিনের ছেলে এনামুল হক শাবনুর(২৪)। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার রাতে একই গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে রজব আলী(২৫) বাদি হয়ে তাহিরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, ঘটনার কিছুদিন পূর্বে এনামুল হক শাবনুরের সাথে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে একই গ্রামের রজব আলীর কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে শাবনুরের পিতা হাফিজ উদ্দিন বিএনপির বড় নেতা পরিচয় দিয়া রজব আলীকে মারধরের চেষ্টা করে। বিগত ৫ আগষ্টের পর বিএনপিকে সুসংগঠিত করতে বর্তমান উপজেলা থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটির সভাপতি প্রার্থী হয় শাবনুরের পিতা হাফিজ উদ্দিন। কিন্তু হাফিজ উদ্দিন আওয়ামীলীগের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে জড়িত থাকায় রাজনীতি থাকায় রজব আলীর ফেইসবুক আইডিতে শাবনুরের পিতা হাফিজ উদ্দিনের আওয়ামীলীগ এর রাজনৈতিক ছবি সম্বলিত পোস্ট করে। যাতে লিখা ছিল “দলের লোক দলে নাই। নামধারী লোক পদ নিয়ে টানাটানি। এসব বলে সময় এখন আমাদের” পরে রজব আলীর ফেইসবুক পোস্ট দেখে হাফিজ উদ্দিনের ছেলে শাবনুর, হাফিজ উদ্দিনের বড় ভাই আমছু মিয়ার ছেলে আমির উদ্দিন (৪০)সহ তার আত্নীয় স্বজনরা রজব আলীকে মারধরের চেষ্টা করে। এবং পোস্ট ডিলেট করার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি দেখায়। পরে প্রাণ ভয়ে রজব আলী তার ফেইসবুক আইডি থেকে পোস্টটি ডিলিট করে। কিন্তু থেমে নাই!বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিনে ছেলে, ভাতিজা ও আত্নীয় স্বজনরা। এরই জের ধরে গত ১৯ আগষ্ট মঙ্গলবার দিবাগত-রাত আড়াইটার সময় শাবনুর, আমির উদ্দিনসহ ৮/১০ জনের একটি গ্রুপ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রজব আলীর বাড়িতে থাকা দোকান ঘরে হামলা চালায়। এ সময় দোকানের দাপাটের টিন কেটে ঘরে ডুকে শাবনুর ও আমির উদ্দিন। পরে দোকানে ঘুমে থাকা রজব আলীর ছোট ভাই ইমান আলী(২০) হাতে-পা রশি দিয়া বেঁধে ফেলে রাখে। পরে দোকানের ক্যাশ বাক্সে থাকা নগদ ৪৫ হাজার টাকা, ১ টি ৩২ ইঞ্চি এলইডি টিভি যাহার বাজার ৩২ হাজার টাকা এবং প্রায় ৫৫ হাজার টাকার তেল, সাবান, সিগারেট, বিস্কুট ইত্যাদি মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিন বলেন, আমি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জেল জুলুম কাটা নির্যাতিত একজন বিএনপি কর্মী। সবাই জানে। আমার ছবি দিয়ে আওয়ামী লীগ সাজিয়ে রজব আলী ফেইসবুকে পোস্ট করে। এনিয়ে দুজনের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝি হলে স্থানীয় লোকজন তা শেষ করে দেয়। এখন আমার ছেলে ও ভাতিজার বিরুদ্ধে তার দোকান লুটের যে অভিযোগ তুলে তা সম্পন্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। এরকম কোন ঘটনাই ঘটেনি। এর সাথে আমার ছেলে ভাতিজা বা আমার কোন আত্নীয় স্বজন জড়িত না।
এ বিষয়ে তাহিরপুর থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে রজব আলী নামের এক যুবক একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তপূর্ব আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।