টাংগাইল প্রতিনিধি: মামলার সূত্র থেকে জানা যায় বাদী মোঃ আঃ জলিল গত ২৪/০৪/২০২৫ ইং তারিখে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি ডাকাতির মামলা করেন। টাঙ্গাইল সদর থানার মামলা নং- ৪১, তারিখ-২৪/০৪/২৫ খ্রিঃ। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২৩/০৪/২০২৫ ইং তারিখে লালমনিরহাট জেলার সদর থানাধীন বড় বাড়ী হাট হতে তিনি ০৬ (ছয়) টি ষাড় গরু ক্রয় করেন। পরবর্তীতে বাদীর ছেলে মোঃ বাবু ও ড্রাইভার মোঃ আল আমিন দ্বয়কে দিয়ে গত ২৩/০৪/২০২৫ ইং তারিখ বিকাল ০৪:০০ ঘটিকায় লালমনিরহাট বড় বাড়ী হাট হতে একটি পিকআপ যার রেজিঃ নং-ঢাকা মেট্রো- ন-১৮-৪০৭১ গাড়ী যোগে নিজ বাড়ী টাঙ্গাইল সদর থানাধীন কাকুয়া ইউনিয়নের দেলধা গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা করে। ইং২৪/০৪/২০২৫ তারিখ রাত্রী অনুমান ০২:০০ ঘটিকায় বাদীর ছেলে ও পিকআপের ড্রাইভার মোঃ আল আমিন টাঙ্গাইল সদর থানাধীণ বাসাখানপুর হট্টিচরা সাকিনস্থ জনৈক শাহজাহান এর জমির পাশে কাকুয়া গামী পাকা রাস্তার উপর পৌঁছা মাত্রই পিছন দিক থেকে আসা একটি অজ্ঞাতনামা নীল রংয়ের পিকআপে ৭/৮ জন ডাকাত তাদের পিকআপকে লক্ষ্য করে চাপা দিয়ে গাড়ী থামায় এবং ড্রাইভারের কাছ থেকে চাবি কেড়ে নেয়।
তখন ডাকাতরা বাদীর ছেলে ও ড্রাইভারকে মারপিট করে জখম করে বাদীর ছেলের মুখ বেঁধে প্লাষ্ট্রিকের বস্তা দিয়া ডাকাতদের পিকআপের মধ্যে নিয়ে চলে যায় এবং রাত্রী অনুমান ০৩:১৫ ঘটিকায় টাঙ্গাইল সদর থানাধীন রাবনা বাইপাস সাকিনস্থ রাবনা ফ্লাই ওভারের ১০০ মিটার সামনে টাঙ্গাইল টু ঢাকা গামী সাইড লেনে পাকা রাস্তার পাশে বাদীর গরু বোঝাই পিকআপ থামিয়ে ডাকাতের কাজে ব্যবহৃত পিকআপে ডাকতারা গরু উঠায় এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত পিকআপে গরু উঠিয়ে বাদীর ছেলে ও ড্রাইভারকে ঝোপের মধ্যে ফেলে দিয়ে চলে যায়।
ডাকাতির মামলা তদন্তে টাঙ্গাইল জেলার পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশের একটি আভিযানিক দল তাৎক্ষনিক তদন্ত শুরু করে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গুপ্তচর হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত ১টি চৌকস টিম ইং ২৪/০৪/২০২৫ তারিখে সিরাজগঞ্জ, বগুড়ার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। ইং ২৪/০৪/২০২৫ তারিখ আভিযানিক দলটি বগুড়া সদর থানা এলাকা হতে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত পিকআপসহ উদ্ধার পূর্বক জব্দ করেন। পরবর্তীতে তথ্য প্রযক্তির মাধ্যমে বগুড়ার শিবগঞ্জ থানা এলাকা হতে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার ১। মোঃ নুর আলম (৩৭), পিতা-মৃত দিলবার হোসেন, মাতা-মৃত হাছনা বানু, সাং-দোপাড়া, গ্রামঃ- পশ্চিমপাড়া, থানা-শিবপুর, জেলা-বগুড়াকে ইং ২৫/০৪/২০২৫ তারিখ দিবাগত রাতে গ্রেফতার করা হয়।
অত্র মামলার ঘটনার আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার মোঃ নুর আলম (৩৭)কে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদকালে সে জানায়, ডাকাতি মামলায় জড়িত আসামী ও লুণ্ঠিত গরু শেরপুর থানা এলাকায় আছে। সেই সুত্র ধরে ২৬/০৪/২০২৫ তারিখ দিবাগত রাত অনুমান ০৩:০০ ঘটিকায় টাঙ্গাইল সদর থানার অভিযানিক দল বগুড়ার শেরপুর থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী ২। মোঃ ইমরান হোসেন (৩০), পিতা- আঃ ছালাম, মাতা- মোছাঃ নওশন আরা, সাং- জামুর মধ্যপাড়া, থানা- শেরপুর জেলা-বগুড়া, ৩। মোঃ রানা মাহমুদ (৫০), পিতা-আমজাদ আলী, মাতা- মৃত কমলা বেগম, সাং- জামুর আদম পাড়া, থানা- শেরপুর, জেলা-বগুড়াদ্বয়কে হেফাজতে নেন। আসামীদ্বয়কে নিবিড় ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের হেফাজতে থাকা ০২ টি গরু উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ডাকাতরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় গরু চুরি, ডাকাতি, ডাকাতির চেষ্টা, মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অপরাপর ডাকাতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।