শাহজালাল মিয়া, সখিপুর (টাংগাইল) প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা বাশতৈল ইউনিয়নের বংশীনগর ( তক্তারচালা) এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের হামলায় গত রবিবার ( ২৭ এপ্রিল), শ্রমিকদল নেতা ডেকোরেশন ব্যাবসায়ী ফজল হক (৫৫) নিহত, স্ত্রী মরিয়ম বেগম ও দুই ছেলে গুরুতর আহত হয়েছে।
ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ৩ জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন মির্জাপুর থানা পুলিশ এবং ১ জনকে ৭ দিন রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে বলেও বিষয়টি নিশ্চিত করেন অফিসার ইনচার্জ মো. মোশারফ হোসেন। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন ১. রুমেলা (৩৭),স্বামী-আনোয়ার ২. গোলবাহার (৫৫),স্বামী-মৃত সিরাজ উদ্দিন, উভয় সাং-হাতিবান্ধা পূর্ব পাড়া ৩. মো.জাফর (৩২),পিতা-মৃত রমিজ উদ্দিন সাং-ঘেচুয়া, সখিপুর, টাঙ্গাইল।
গত রবিবার সকালে উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের বংশীনগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত ফজল হক বংশীনগর গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি বাঁশতৈল ইউনিয়নের শ্রমিকদল নেতা।
তিনি পেশায় একজন ডেকোরেটর ব্যবসায়ী ছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৪৫ বছর পূর্বে ফজল হকের দাদি বংশীনগর মৌজায় তার নামে ৫৫ শতাংশ জমি দলিল করে দেন। কিন্ত ওই জমিটি ভোগ দখল করছিলেন ফজল হকের ফুপাত ভাই মৃত আবদুল মান্নানের ছেলে পারভেজ গং। এদিকে ৪৫ বছর পূর্বের দলিল পেয়ে ফজল হক জমি দখল পেতে উদ্যোগ নেন। তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মাতাব্বরদের নিয়ে একাধিক সালিশ বৈঠকও করেন। তাতে কোন সমাধান না পেয়ে সম্প্রতি আদালতে একটি মামলাও করেন। পরে জমির চারপাশে কাটা তারের বেড়া দিয়ে ঘেরাও দেন। অপরদিকে রবিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পারভেজ ৩০থেকে ৪০ জন লোকসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও বাঁশ লাঠি নিয়ে ফজল হকের কাটা তারের বেড়া উঠাতে গেলে ফজল হক বাঁধা প্রদান করেন।
এসময় পারভেজ ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন ফজল হককে এলোপাথারী পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। ফজল হকের আত্মচিৎকারে তার স্ত্রী মরিয়ম বেগম ছেলে মনিরুজ্জামান এগিয়ে আসলে তাদেরও মারপিট করে আহত করেন পারভেজ ও তার লোকজন। আশপাশের লোকজন এসে গুরুতর আহত ফজল হক, স্ত্রী ও ছেলেকে উদ্ধার করে উপজেলাস্থ জামুর্কী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফজল হককে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মরিয়ম আক্তার বাদি হয়ে প্রধান আসামি পারভেজসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনের নামে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন। যার মামলা নাম্বার ৩০/২৫ মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোশারফ হোসেন জানান,আমরা ৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছি এবং জাফর নামের একজনকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছি। ঘটনায় জড়িত মূল হোতাদের গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলমান।